পাবনার সুজানগরে আওয়ামী লীগ কর্মী মোজাহার বিশ্বাস হত্যা মামলায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শাহীনুজ্জামান শাহীনকে আসামি করার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছের নেতাকর্মীরা।
শনিবার (০৬ জুলাই) দুপুরের দিকে পাবনা-সুজানগর সড়কের সাতবাড়িয়া শুটকার মোড়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের আয়োজনে দুই ঘন্টাব্যাপি বিক্ষোভ, অবরোধ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, সুজানগর পৌর মেয়র রেজাউল করিম রেজা, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ফেরদৌস আলম ফিরোজ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইদুর রহমান, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রাজু আহমেদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা, আব্দুস সাত্তার, সুজানগর উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা সরদার আব্দুর রউফ,ইউনুস আলী বাদশা, প্রমুখ।
এসময় বক্তারা বলেন, বর্তমান সুজানগর উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল ওহাব নির্বাচনে জয়ী হয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীনুজ্জামান শাহীনের সমর্থকদের উপরে নানাভাবে হামলা মামলা দিয়ে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করছে। সাধারণ সম্পাদকের নামে মামলা হলেও তিনি আনন্দ ভ্রমণে বর্তমানে কক্সবাজার অবস্থান করছেন। সুজানগরে আগুন ধরিয়ে দিয়ে তিনি কক্সবাজারের শীতল হাওয়া খাচ্ছেন। আসলে এটা দলের মধ্যে বিভেদ তৈরি করে দিচ্ছেন। বিএনপির নেতাদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে এমন অপকর্মে লিপ্ত হয়েছেন তিনি।
বক্তারা আরও বলেন, গত (২১ জুন) তারিখে
দলের একজন নেতাকে পরিকল্পিতভাবে বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান দলের সভাপতি হত্যা করে এরপর গত (২৭ জুন) তার একজন সমর্থকের মৃত্যুর পরে ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে উপজেলার সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা শাহীনের নামে মামলা করিয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুল ওহাব। এই জনপদে পূর্বের যত হত্যাকান্ড ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ড সংগঠিত হয়েছে তার গডফাদার বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল ওহাব। মিথ্যা বানোয়াট মামলা প্রত্যাহার করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন এবং মামলা প্রত্যাহার না হলে কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারী দেন বক্তব্যরা। এসময় পুলিশ প্রশাসনও পক্ষপাতমূলক আচরণ করছেন বলে অভিযোগ করেন। হত্যার পর কোন প্রকার তদন্ত না শাহিনুজ্জামান শাহীনের নামে মিথ্যা মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে। আসলে পুলিশের এটা গাফিলতি বলব নাকি পক্ষপাত বলব?০
।প্রশাসন যদি এই মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার না করে প্রয়োজনে সুজানগর উপজেলাকে অচল করে দেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, গত ৯ মে সুজানগর উপজেলা নির্বাচনের পর থেকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল ওহাব এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শাহীনুজ্জামান শাহীনের সমর্থকদের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল।
এ ঘটনার জেরে গত ২১ জুন উপজেলার রানীনগর এলাকায় ওহাব ও শাহীনের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে আল আমিন মিয়া (৩৫) নামে শাহীন গ্রুপের একজন কর্মী নিহত হয়। এ ঘটনায় জের ধরে ওইদিন রাতেই মোজাহার বিশ্বাসকে এলোপাথারী কোপায় দুর্বৃত্তরা। পরে তিনি ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ২৭ জুন মারা যান।
এ ঘটনায় নিহত মোজাহার বিশ্বাসের ছোট ভাই জামাল বিশ্বাস বাদী হয়ে গত ৩০ জুন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীনুজ্জামান শাহীন কে প্রধান আসামি করে ২৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।