প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিয়ের প্রলোভনে তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে এক অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। পরে বিয়ে না করায় ওই কৃষি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করেছেন ভুক্তভোগী তরুণী। এ নিয়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
অভিযুক্ত কৃষি কর্মকর্তার নাম মোঃ. মামুনুর রশিদ ওরফে মিমো (৩৮)। তিনি বগুড়ার শেরপুর উপজেলার উত্তর সাহাপাড়া গ্রামের মৃত খায়রুল আলমের ছেলে। চাটমোহর উপজেলা কৃষি অফিসে দেড় বছর যাবৎ অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মামুন ওরফে মিমো।
গত ২২ আগষ্ট বগুড়ার কাহালু থানায় মামলাটি দায়ের করেন ঐ এলাকার ভুক্তভোগী এক তরুণী। মামলা দায়েরের পর থেকে বিভিন্নভাবে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ তরুণীর। মামলা দায়েরের পর থেকে গা ঢাকা দিয়েছেন মামুন।
ভুক্তভোগী তরুণীর তার মামলায় অভিযোগ করে বলেছেন, বাড়ি পাশাপাশি গ্রামে হওয়ার সুবাদে কৃষি কর্মকর্তা তরুণীকে প্রেমের প্রস্তাব দেন। তিনি রাজি না হলে নিজের প্রাণ শেষ করে ফেলবেন বলে হুমকি দেন মামুন। এক পর্যায়ে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে তরুণীকে মিথ্যা প্রেমের জালে ফাঁসায়। দীর্ঘদিনের সম্পর্কের এক পর্যায়ে চলতি বছরের গত ১৩ এপ্রিল কাহালু থানাধীন জামগ্রাম ইউনিয়নের অন্তর্গত শান্তা গ্রামের বাটালদিঘী নামক জায়গায় বেড়ানোর কথা বলে তরুণীকে নিয়ে যান মামুন।
সেখানে একটি শ্মশানের লাশ পোড়ানোর ঘরের পাশে তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা করেন মামুন। তরুণী তাকে বাধা দিলে মারধর করে এবং জোরপূর্বক একাধিকবার ধর্ষণ করেন মামুন ওরফে মিমো। পরে তরুণী বিষয়টি তার পরিচিত কয়েকজনকে ঘটনাটি খুলে বলেন। তখন তারা ঐ কৃষি অফিসারকে ডেকে নিয়ে তার কাছে শুনতে চাইলে তিনি সম্পূর্ণ বিষয়গুলো স্বীকার করেন। এ সময় মামুনকে বিয়ে করার কথা বললে তিনি তাতে অস্বীকার করে দ্রুত চলে যান। এরপর থেকে মামুন বিভিন্নভাবে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন ওই তরুণীকে।
এ বিষয়ে মামলার বাদী ভুক্তভোগী ওই তরুণী বলেন, ’মামুনুর রশীদ আমাকে ছাড়াও আরো অনেক নারীতে আসক্ত ছিলেন। বিষয়টি আমি জানতাম না। আমি পরে জেনেছি অনেক নারীর সর্বনাশ করেছেন তিনি। কিন্তু তার নানা প্রভাবে কোন নারীই ভয়ে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে পারেননি। আমি এই অভিযোগ দায়েরের মাধ্যমে লম্পট ধর্ষকের বিচার দাবি করছি।’
এ বিষয়ে অভিযুক্ত মামুনুর রশীদ মিমোর বক্তব্য নেয়ার জন্য সম্প্রতি তার চাটমোহর কৃষি অফিসে দুইদিন গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। তার মুঠোফোনে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। অফিসের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, গত এক সপ্তাহ যাবৎ অফিসে আসছেন না মামুন ওরফে মিমো। তার সঙ্গে অফিসের কেউই যোগাযোগ করতে পারছেন না। এতে ধারণা করো হচ্ছে গ্রেপ্তার এড়াতে তিনি গা ঢাকা দিয়েছেন।’
এ বিষয়ে বগুড়ার কাহালু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহিনুজ্জামান বলেন, ’এ বিষয়ে আমরা একটি অভিযোগ পেয়েছি, মামলা নথিভূক্ত হয়েছে। মেয়েটির ডাক্তারী পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। মামলার তদন্ত চলছে, তদন্ত রিপোর্ট হাতে পেলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
উল্লেখ্য, তদন্তের স্বার্থে এতদিন মামলার বিষয়টি অনেকটা গোপন রাখা হয়েছিল বলে দাবি ওই তরুণীর। যে কারণে মামলার বিষয়টি বর্তমানে জানাজানি হয়েছে।