লিবিয়ায় অবস্থানরত পাবনার এক প্রবাসীকে জিম্মি করে নির্যাতনের ভিডিও দেখিয়ে বাংলাদেশে ভুক্তভোগীর পরিবারের কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগে অপহরণ চক্রের দুই সদস্যকে আটক করেছে পাবনা জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। শুক্রবার (৭ জুন) দুপুরে এ তথ্য জানান পাবনার পুলিশ সুপার আকবর আলী মুনসী। এর আগে বৃহস্পতিবার (৬ জুন) অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।
আটককৃতরা হলেন, চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণের দক্ষিণ পশ্চিম দিঘলদি এলাকার মৃত পণ্ডিত আলী ব্যাপারীর ছেলে হাবিবুর রহমান সুমন (৩০) এবং একই এলাকার দেলোয়ার হোসেন গাজীর ছেলে রবিউল আওয়াল রবি (২৮)।
পুলিশ সুপার আকবর আলী অভিযোগের বরাত দিয়ে জানান, মাসুদ রানা (৪০) নামে পাবনার এক ব্যক্তি গত ৪ বছর যাবত লিবিয়ার সিটি খলিফা নামক স্থানে দরজির দোকান নিয়ে ব্যবসা করে আসছিলেন। গত ১৪ মে সকাল ৮টায় অজ্ঞাতনামা ইমো নম্বর হতে ভুক্তভোগী মাসুদের স্ত্রীর ইমো নম্বরে ফোন করে অপহরণকারী সদস্যরা বলে তার স্বামীকে অপহরণ করা হয়েছে। জীবিত ফেরত চাইলে তাদের ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দিতে হবে। টাকা না দিলে মাসুদকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়।
অপহরণকারীরা বাংলাদেশি বিকাশ নম্বর দেয় এবং টাকা পাঠাতে বলে। মাসুদের অসহায় বাবা ধার-দেনা করে অপহরণকারীদের দেয়া বিকাশ নম্বরে ১০ লাখ টাকা প্রদান করেন। উক্ত টাকা পাওয়ার পর গত ২০ মে অপহরণকারীরা আবারো ইমো নম্বর হতে পুনরায় ফোন করে আরও ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে এবং মাসুদকে মারধরের ভিডিও পাঠায় পরিবারের কাছে।
পুলিশ সুপার আরও জানান, এক পর্যায়ে মাসুদের মা মলিনা খাতুন গত বুধবার (৫ জুন) পাবনা সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। পরদিন মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে কাজ শুরু করে পুলিশ। এক পর্যায়ে ডিবি টিম তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ও অনুসন্ধানী নানান কৌশল ব্যবহার করে অভিযুক্তদের শনাক্ত এবং চাঁদপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে।
পুলিশের কাছে গ্রেপ্তারকৃতদের প্রাথমিক স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে পুলিশ সুপার আকবর আলী বলেন, গ্রেপ্তারকৃতদের সঙ্গে লিবিয়ায় থাকা অপহরণকারীদের পূর্ব-পরিচয় আছে। অপহরণকারীরা অপহৃতদের পরিবারের পাঠানো টাকা দেশে থাকা সুমন ও রবির মাধ্যমে লেনদেন করতো। লিবিয়ায় থাকা অপহরণকারীদেরও পরিচয় পাওয়া গেছে। তবে এই মুহূর্তে তদন্তের স্বার্থে তাদের নাম-পরিচয় প্রকাশ করা যাচ্ছে না। আমরা লিবিয়ায় অপহৃতকে উদ্ধারে জোর চেষ্টা চালাচ্ছি।