পাবনার সুজানগর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের বেশ কয়েকটি বাড়ি-ঘরে হামলা ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। এতে এক মুক্তিযোদ্ধা ও এক নারীসহ অন্তত ৫ জন আহত হয়েছেন। আহতদের পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৯ মে) সন্ধ্যার ঘটনার বিষয়ে সত্যতা নিশ্চিত করেছেন পাবনার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার ( সুজানগর সার্কেল) মো. রবিউল ইসলাম। এর আগে বুধবার (৮ মে) রাতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় এসব ঘটনা ঘটেছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, বুধবার ভোটগণনা শেষে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোটরসাইকেল প্রতীকের আব্দুল ওহাব বিজয়ীয় হোন এবং আনারস প্রতীকের উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান চেয়ারম্যান শাহীনুজ্জামান শাহীন পরাজিত হোন। বুধবার ভোট গণনাকালেই উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বিজয় মিছিল বের মোটরসাইকেল প্রতীকের সমর্থকরা।
এসময় তারা মানিকহাট ইউনিয়নের ক্ষেতুপাড়া, সাগরকান্দি ইউনিয়নের সাগরকান্দি, গোবিন্দপুর, শ্রীপুর, দুর্গাপুর, সাতবাড়িয়া ইউনিয়নের ভাটপাড়া, আহম্মদপুর ইউনিয়নের আহম্মদপুর সোনাতালা, বাদাইসহ বিভিন্ন এলাকায় অন্তত অর্ধশত বাড়ি-ঘরে হামলা করে ব্যাপক ভাংচুর করে। এতে এক নারীসহ অন্তত ৪ জন আহত হয়েছেন। একই রাতে আহম্মদপুর ইউনিয়নের দক্ষিণচর এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মতিনের বাড়িতে হামলা করে এবং তাকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেন। পরে তাকে উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পরাজিত প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান চেয়ারম্যান শাহীনুজ্জামান শাহীন বলেন, ‘পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর মতো আমার সমর্থকদের শত শত বাড়ি-ঘরে হামলা করা হয়েছে এবং নারকীয় তাণ্ডব চালানো হয়েছে। সন্ত্রাসীরা সংখ্যালঘুদের বাড়ি-ঘর ও মন্দিরে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করেছে। তারা একজন বীর মুক্তিযোদ্ধাকেও হত্যাচেষ্টা করেছে। আমার পরাজয় নিয়ে বা নির্বাচন নিয়ে কোনো অভিযোগ নেই কিন্তু আমার সমর্থকদের বাড়ি-ঘরে এসব নারকীয় তাণ্ডবের তীব্র নিন্দা জানাই এবং দোষীদের দ্রুত আইনে আওতায় নিয়ে আসতে হবে।’
এবিষয়ে যোগাযোগ করা হলে বিজয়ী প্রার্থী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আনারস প্রতীকের আব্দুল ওহাবের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
এব্যাপার পাবনার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (সুজানগর সার্কেল) মো. রবিউল ইসলাম বলেন, ‘ঘটনার সঙ্গে সঙ্গেই আমরা বিভিন্ন এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করেছি এবং পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে। আমি কয়েকটি বাড়ি পরিদর্শন করেছি এবং তাদের বলেছি থানায় লিখিত অভিযোগ দিতে। অভিযোগ দিলেই মামলা দায়ের করা হবে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।’