আসন্ন পাবনা বেড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছেন জাতীয় সংসদের ডেপুটিস্পিকার অ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকুর ছোট ভাই সাবেক পৌর মেয়র মো. আব্দুল বাতেন। তিনি প্রায় প্রায় ৩৩ লাখ টাকা আয়কর বকেয়া রেখেই আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। আয়কর কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে বিষয়টি লিখিত ভাবে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে। এরপরেও তিনি কিভাবে বৈধপ্রার্থী হলেন তানিয়ে জনমনে চলছে ব্যপক আলোচনা সমালচনা।
তবে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বলছেন, প্রার্থীর বৈধতা যাচাই বাছাইয়ে নিয়ম অনুসাওে আয়কর সনদ দেখা হয়। আব্দুল বাতেন আয়কর সনদ জমা দিয়েছেন। ফলে তাঁর প্রার্থীতা বাতিল হয়নি।
আয়কর সার্কেল-১১ (কাশিনাথপুর) কার্যালয় থেকে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ের উপ-কর কমিশনার মো. সাইফুর রহমান স্বাক্ষরিত এক পত্রে উপজেলাটিতে নির্বাচনে অংশ নেয়া মোট ১১ জন প্রার্থীর আয়কর সংক্রান্ত তথ্য দেয়া হয়েছে। এরমধ্যে চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুল বাতেনের ৩২ লাখ ৮২ হাজার ৩২১ টাকা আয়কর বকেয়া রয়েছে বলে জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে জানতে উপ-কর কমিশনার মো.সাইফুর রহমান চিঠির বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় থেকেই প্রার্থীদের আয়কর সংক্রান্ত তথ্য চাওয়া হয়েছিল। আমরা তথ্য প্রার্থীদের নামের আয়করের তথ্য তাদেরকে দিয়েছি। আব্দুল বাতেনের বকেয়া কর রয়েছে কয়েক বছর আগের। তাঁকে কর পরিষোধের জন্য চিঠিও দেয়া হয়েছে। তিনি এই করের টাকা কমাতে আপিল করেছেন। কর বকেয়া থাকতে তিনি আয়কর সনদ পেলেন কিভাবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সনদের সঙ্গে সঠিক ভাবে কর পরিশোধেন কোন সংযোগ নেই। কেউ আয়কর রির্টান জমা দিলেই তিনি আয়কর সনদ পেতে পারেন। আব্দুল বাতেন সাহেবও রির্টান জমা দিয়ে সনদ পেয়েছেন। কিন্তু তাঁর সম্পদ ও আয় অনুযায়ি কর বকেয়া রয়েছে। এদিকে বড় অংকের আয়কর বকেয়া রেখে তিনি কিভাবে বৈধপ্রার্থী হলেন তানিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
এ বিষয়ে এই নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করা আব্দুল বাতেনের প্রতিদ্বন্দী চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. আফজাল হোসেন বলেন, যেখানে বাড়ির বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকলে প্রার্থীতা বাতিল হয়। সেখানে এত টাকা আয়কর বকেয়া রেখে কিভাবে তিনি বৈধ প্রার্থী হলেন এটি বুঝে উঠতে পারছিনা। বিষয়টি নিয়ে নির্বাচন সংশ্লিষ্টরা অবশ্যই তদন্ত করে দেখবেন।
অপর চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. রেজাউল হক বাবু বলেন, প্রার্থীদের মনোনয়ন পত্র যাচাই বাছাইয়ের দিন রিটার্নিং কর্মকর্তাকে বিষয়টি জানানো হয়েছিল। তিনি এটি কর্ণপাত করেননি এড়িয়ে গেছেন। আইনের বিষয়টি তিনিই ভালো জানেন। তবে এত টাকা আয় কর বকেয়া থাকার পরেও প্রার্থীর বৈধতা নিয়ে আমাদের প্রশ্ন রয়েছে।
তবে এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে চেয়ারম্যানপ্রার্থী আব্দুল বাতেন বলেন, আমার কোন আয়কর বকেয়া নেই। যিনি চিঠি দিয়েছেন তাকে কিজ্ঞাসা করে দেখেন কোন বছরের বকেয়া আমার। ১৯৭৮ সাল থেকে আমি নিয়মিত আয়কর পরিষোধ করে আসছি। আমার প্রতি বছরের আয়কর সনদ রয়েছে। তবে কেউ আমার প্রার্থীতা বাতিলের জন্য ষড়যন্ত্র করে এমন অভিযোগ তুলতে পারে। বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখার দাবি করছি।
জেলা নির্বাচন ও রির্টানিং ককর্মকর্তা মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, প্রার্থীর যোগ্যতা অযোগ্য বিধিতে আয়কর বিষয়ে সনদ দেবার কথা বলা হয়েছে। এখানে আয়কব বকেয়া নিয়ে কিছু বলা নেই। আব্দুল বাতেন মনোনয়ন পত্রের সঙ্গে তাঁর সর্বশেষ কর প্রদানের সনদ জমা দিয়েছেন। ফলে তাঁর প্রার্থীতা বাতিল হয়নি।