সংস্কার কোটেশন বা আরএফকিউ/ডিএমপি নামে পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) ২০২২-২৩ অর্থ বছরের অ্যানুয়াল প্রকিউরমেন্ট প্ল্যান (এপিপি) বা বার্ষিক ক্রয়-বাস্তবায়ন পরিকল্পনার ছোট ছোট প্রকল্প (অনুন্নয়ন রাজস্ব) বেশিরভাগ প্রকল্পের কাজ না করেই টাকা উত্তোলন করে হরিলুট করা হয়েছে। এসব টাকা পাবনা পাউবোর শীর্ষ কর্মকর্তা, প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও ঠিকাদাররা যোগসাজশ করে আত্মসাৎ করেছেন। এভাবে প্রতি অর্থ বছরেই কাজ না করেই বিপুল পরিমাণ টাকা আত্মসাৎ করছেন তারা।
প্রাপ্ততথ্য মতে জানা গেছে, পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) অ্যানুয়াল প্রকিউরমেন্ট প্ল্যান (এপিপি) অনুযায়ী ২০২২-২৩ অর্থ বছরে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ৭২টি প্রকল্পের কাজ হয়েছে। এসব প্রকল্প প্রতি ব্যয় হয়েছে ৫০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৮ লক্ষ টাকা পর্যন্ত। এরমধ্যে ই-জিপির মাধ্যমে কাজ করা হয়েছে ২৮টি, বাকিগুলো সম্পন্ন হয়েছে ম্যানুয়াল টেন্ডারের মাধ্যমে। ই-জিপি টেন্ডারের মাধ্যমে পাওয়া প্রকল্পগুলো কিছুটা বাস্তবায়ন হলেও ম্যানুয়াল টেন্ডারের প্রকল্পের ক্ষেত্রে হরিলুট হয়েছে। ম্যানুয়াল টেন্ডারের ৪৪টি প্রকল্পের অধিকাংশই নামকাওয়াস্তে কাজ হয়েছে। এরমধ্যে ১০-১৫টি প্রকল্পের কাজ কিছুই করা হয়নি। অথচ এইসব প্রকল্পের টাকা ২০২২-২৩ অর্থ বছরে বিল সম্পন্ন করা হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সংশ্লিষ্টরা বলছেন- পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আফসার উদ্দীন, উপবিভাগীয় প্রকৌশলী (এসডিই) খলিলুর রহমান, উপ-সহকারী প্রকৌশলী (এসএই) সুমিরা খাতুন এবং সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের যোগসাজশে এসব টাকা হরিলুট করা হয়েছে। এর আগের অর্থবছরের টাকাও এভাবেই হরিলুট করা হয়েছে।
এসব কাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপবিভাগীয় প্রকৌশলী (এসডিই) খলিলুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘এসব বিষয়ে পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সঙ্গে যোগাযোগ করেন। আমি ঢাকায় (বদলি) চলে আসছি। এসব (কাজ না করেই টাকা উত্তোলন) নিয়ে আমি কিছু জানি না।’ এরপর ফোন কেটে দেন, পরে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও ফোন রিসিভ করেননি।
এব্যাপারে এসএই সুমিরা খাতুন বলেন, ‘এসব অভিযোগ মিথ্যা। এখন নদীর ক্যানাল ভেঙে যাচ্ছে, চলে যাচ্ছে এইগুলোর কাজ না করে কীভাবে আমরা টাকা উত্তোলন করে খেয়ে নিবো। এগুলোর বেড়ার পানি উন্নয়ন বোর্ডের হতে পারে, আমাদের (পাবনা) না, আমাদের সব প্রকল্পের কাজ ঠিকভাবেই হয়েছে। কাজ হয়নি এমন প্রকল্প নাই।’
এবিষয়ে সংশ্লিষ্ট তথ্য নিতে এই প্রতিবেদক দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আফসার উদ্দীনের কাছে সরাসরি একাধিকবার যোগাযোগ করলেও তিনি তথ্য-উপাত্ত দিতে অনীহা প্রকাশ করেন। তবে তিনি বলেন, ‘অন্য সময়ে আসেন তথ্য দেবো, আমাদের সব প্রকল্পের কাজ সঠিকভাবে সম্পন্ন হয়েছে। কোনো অনিয়ম হয়নি। অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ মিথ্যা।’