পাবনার একটি ছাত্রীনিবাসে সিনিয়র শিক্ষার্থীদের র্যাগিংয়ের শিকার হয়েছেন শিমু রানী তালুকদার নামের পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবপ্রবি) এক ছাত্রী। তাকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী সব্বেজ টাওয়ারে (ছাত্রীনিবাস) এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী শিমু রানী তালুকদার বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। অভিযুক্তরা হলেন- পরিসংখ্যান বিভাগের রুকাইয়া, সাদিয়া পারভিন সোমা, তাসলিমা, গুলনাহার, সুমাইয়া, সাকিলা, লোকপ্রশাসন বিভাগের সায়েদা সুলতানা শাওন ও ইংরেজি বিভাগের ইসরাত জাহান ইমু।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী ৫ তলা বিশিষ্ট সব্বেজ টাওয়ারে (ছাত্রীনিবাস) ছাত্রীরা ভাড়া থাকেন। শনিবার রাত ৮টার দিকে প্রথম বর্ষের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীকে নিজেদের রুমে ডাকেন সিনিয়র শিক্ষার্থীরা। এসময় শিমু রানী তালুকদার তালুকদার নিজেকে অসুস্থ দাবি করে সেখানে যেতে অস্বীকার করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে ছাত্রীনিবাসের ছাদে নিয়ে গেয়ে রাত ১১টা পর্যন্ত র্যাগিংয়ের নামে বিভিন্নভাবে নির্যাতন করা হয়। এসময় তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
র্যাগিংয়ের বর্ণনা দিতে নারাজ ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী শিমু রানী তালুকদার। তবে তিনি বলেন, “আমার মতো এরকম ঘটনার শিকার যেন কেউ না হয়। আমার এই ঘটনা আমার পরিবার বা অন্য কেউ না জানুন- এই জন্য বলতে চাচ্ছি না। আমি সিনিয়র আপুদের অনেক নিষেধ করার পরও তারা আমার কথা শোনেননি। এর বেশি কিছু আমি বলতে পারবো না।”
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থীরা জানান ঘটনা ধামাচাপা দিতে চেষ্টা করছেন ছাত্রীনিবাসের মালিক আবুল কালাম আজাদ। আবুল কালাম আজাদ বলেন, “রাতে ১০ জন জুনিয়র শিক্ষার্থীকে মেসের সিনিয়র কিছু শিক্ষার্থী ওপরে ডেকে নিয়েছিল। কিন্তু তেমন কিছু হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লোকজন আসছিল। সে একটু অসুস্থ হয়ে গেয়েছিল আরকি।”
এবিষয়ে ইতিহাস বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মো. হাবিবুল্লাহ বলেন, “বিষয়টি জানার পরপরই আমি খোঁজখবর নিয়েছি। এবং তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি। অভিযুক্তরা অন্য বিভাগের শিক্ষার্থী। এজন্য আমি তো তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে পারি না। এ বিষয়ে আমি প্রক্টর ও ছাত্র উপদেষ্টাকে জানিয়েছি “
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. কামাল হােসেন বলেন, এরকম ঘটনা আমিও শুনেছি। ওই শিক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে আগামীকাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ডাকা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে কি ঘটেছিল তা জেনে পরে বলতে পারবো।