পাবনা সদর উপজেলার গয়েশপুর ইউনিয়নের ধোপাঘাটা গ্রামে তাঁত ব্যবসায়ী ইলিয়াস হত্যার প্রধান আসামি বাবলু ব্যাপারী (৪২) কে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
গ্রেপ্তারকৃত বাবলু সদর উপজেলার গয়েশপুর ইউনিয়নের জালালপুর নতুনপাড়া গ্রামের মৃত মুছা ব্যাপারীর ছেলে।
বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) সকাল সাড়ে দশটায় পাবনার র্যাব কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র্যাব-১২ পাবনার কোম্পানি কমান্ডার স্কোয়াড্রন লিডার তৌহিদুল মবিন খান।
তিনি জানান, গত ৩১ জুলাই ধোপাঘাটা গ্রামের ক্ষেতের পাশ থেকে ইলিয়াস হোসেনের মরদেহ পাওয়া যায়। ইলিয়াসের মাথা ও ঘাড়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে তার শরীর ক্ষতবিক্ষত করা হয় এবং তার দুই পা হাঁটু থেকে বিচ্ছিন্ন করার মাধ্যমে মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়। এ ঘটনায় পহেলা আগস্ট সদর থানায় একটি মামলা দায়েরের পর বিষয়টি নিয়ে গোয়েন্দা তৎপরতা শুরু করে র্যাব।
এরই ধারাবাহিকতায় বুধবার (০৯ আগস্ট) বিকেলে জেলার সাঁথিয়া উপজেলাযর চৌবাড়ীয়া গ্রাম থেকে আত্মগোপনকৃত ইলিয়াস হত্যা মামলার প্রধান আসামি বাবলু ব্যাপারীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
হত্যার কারন সম্পর্কে র্যাব জানায়, গত ৯ জুলাই জালালপুর বাজারে একটি জিন্স প্যান্ট কেনাবেচাকে কেন্দ্র করে নিহত ইলিয়াস ও গ্রেপ্তার বাবলুর মধ্যে কথা কাটাকাটি আর হাতাহাতির জেরে এ হত্যাকান্ড ঘটে।
গ্রেপ্তারকৃত বাবলুর বিরুদ্ধে ২০১৮ সালে আতাইকুলা থানায় একটি হত্যা মামলা সহ কয়েকটি মামলা রয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে তাকে সদর থানার মাধ্যমে আদালতে সোপর্দ করা হয়।
এদিকে, র্যাব ও স্থানীয়দের একাধিক সুত্র জানায়, গ্রেপ্তারকৃত বাবলু ব্যাপারী ইতিপূর্বে চরমপন্থী সংগঠন লাল পতাকার সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। পরবর্তীতে জেলার বিভিন্ন চরমপন্থীদের সাথে তিনিও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার অঙ্গীকার করেছিলেন। সরকারি বিভিন্ন সুযোগ সুবিধাও ভোগ করে আসছিলেন বাবলু ব্যাপারী।
আত্মসমর্পণ করা চরমপন্থিদের সংগঠন জালালপুর নতুন পাড়া সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন সমিতির নামে সরকারি ভাবে বরাদ্দ দেয়া হয় ৫ টন চাল। চরমপন্থিদের আত্মসমর্পণের পর পুর্বের সকল মামলা থেকে অব্যহতি দিয়ে সাধারন জীবনে ফিরিয়ে আনতে সরকারি এই প্রচেষ্টাকে ব্যর্থ ও প্রশ্নবিদ্ধ করে দিলো বাবলু ব্যাপারীর এই অপরাধ। অস্ত্র জমা দিয়ে আত্মসমর্পনের পর আবারো অপরাধের সাথে জড়ানোর এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বর্তমানে মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়েছে একটি গ্রামীন প্রবাদ- “অস্ত্র জমা দিয়েছি, ট্রেনিং তো জমা দেই নাই”!