বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা, জাতীয় রবীন্দ্র সঙ্গীত সম্মিলন পরিষদ ও ছায়ানটের আমৃত্যু সভাপতি বিশিষ্ট রবীন্দ্র গবেষক , শিক্ষাবিদ, একুশে পদকপ্রাপ্ত শিল্পী প্রয়াত অধ্যাপক সনজীদা খাতুনের স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে জাতীয় রবীন্দ্র সঙ্গীত সম্মিলন পরিষদ পাবনা জেলা শাখার উদ্যোগে শহরের ঐতিহ্যবাহী অন্নদা গোবিন্দ পাবলিক লাইব্রেরীর স্যামসন এইচ চৌধুরী মিলনায়তনে স্মরণ সভাটি অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় তার বিদ্রোহী আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
অনুষ্ঠানে জাতীয় রবীন্দ্র সঙ্গীত সম্মিলন পরিষদ পাবনা জেলা শাখার সভাপতি রবিউল ইসলাম রবি’র সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন জাতীয় রবীন্দ্র সঙ্গীত সম্মিলন পরিষদ পাবনা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক বিশিষ্ট সাংবাদিক আব্দুল মতীন খান, সহ-সভাপতি কাজী রফিকুল ইসলাম, সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য রুকসানা পারভীন, সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য মারুফা মঞ্জুরী খান সৌমি সহ আরো অনেকে।
সনজীদার ১৯৫৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে সাম্মানিক স্নাতক এবং ১৯৫৫ সালে বিশ্বভারতী থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন।
বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক জগতের প্রথম সারির ব্যক্তিত্ব যিনি রবীন্দ্রনাথের গানকে মানুষের হৃদয়ের গভীরে পৌঁছে দিয়েছিলেন এবং ক্রমশ এক কিংবদন্তি হয়ে উঠেছিলেন, সেই সনজীদা খাতুন প্রয়াত হয়েছেন ঢাকার ‘স্কয়ার’ হাসপাতালে। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯২ বছর।
রবীন্দ্রনাথের গানই ছিল তাঁর বেঁচে থাকার অবিচ্ছেদ্য প্রেরণা। সঙ্গীত থেকে সাহিত্যে ছিল তাঁর সাবলীল বিচরণ। বাঙালির আত্মপরিচয়কে প্রতিষ্ঠা করার জন্য তাঁর লড়াই ছিল আজীবন। ১৯৫২-র ভাষা আন্দোলন থেকে ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ– বাংলাদেশের (তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের) সবচেয়ে প্রতিকূল সময়ে শাসকের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে, আন্দোলনে কখনো পেছনে থাকেননি। ১৯৬১ সালে রবীন্দ্রনাথের জন্মশতবর্ষে যখন তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে রবীন্দ্রনাথের গান গাওয়াও ছিল শাসকের চোখে অন্যায়। সেসময় যাঁরা রবীন্দ্রনাথের গানকেই নিজেদের প্রতিবাদী জীবনের পাথেয় করে তুলেছিলেন, তাঁদেরই অন্যতম সনজীদা খাতুন। ১৯৬৩ সালে ‘ছায়ানট’ সংস্থার প্রতিষ্ঠাও এই কারণেই। তিনি ছিলেন ওই সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এবং মৃত্যুর আগে পর্যন্ত ছিলেন তার সভাপতি।